Trickbd Free এর পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজকে আপনারা এই পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারবেন,রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ কি কি? রোজা ভঙ্গ সম্পর্কিত মাসায়েল এবং রোজার কাফ্ফারা সম্পর্কে।
|
রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ মাসায়েল ও কাফ্ফারা |
রোজা ভঙ্গের কারণসমূহ
- নাকে বা কানে তৈল বা ঔষধ প্রবেশ করাইলে।
- ইচ্ছাকৃত ভাবে মুখ ভরিয়া বমি করিলে।
- মুখে বা নাকে পানি দেওয়ার সময় পানি গলার ভিতর ঢুকিলে।
- দাঁতের ফাঁকে আটকানো বুট পরিমাণ খাদ্য গিলিয়া ফেলিলে।
- সুবহে সাদেকের সময় সাহরী খাইলে। ও সূর্যাস্তের পূর্বেই সূর্য ডুবিয়াছে মনে করিয়া ইফতার করিলে।
- জবরদস্তি করিয়া কিছু খাওয়াইলে।
- সুবহে সাদেক হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এর ভিতর সহবাস করিলে।
রোজা ভঙ্গ সম্পর্কিত মাসায়েল
কী কী কারণে রোজা ফাসেদ হয় বা নষ্ট হয় সে সমস্ত জেনে রাখা অতি প্রয়োজন। না জানলে নিজের অজান্তেই রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। অথচ রোজার কষ্ট করে কোনো লাভও হবে না। এ ব্যাপারে জ্ঞাতব্য বিষয়সমূহ নিয়ে লিখে দেয়া হলোঃ
১. যদি রোজাদার ব্যক্তি ভুলে কিছু খায় বা পান করে অথবা স্ত্রী সহবাস করে তবে রোজা ভঙ্গ হয় না। এই নিয়ম সকল প্রকার রোজার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
২. এরকম ভুলে যদি পেট ভরেও খায় তবুও রোজা ভাঙবে না। কিন্তু রোজার কথা স্মরণ হলে সঙ্গে সঙ্গে আহার বা সহবাস বন্ধ করে দিতে হবে। জ্ঞাতসারে পানাহার বা সহবাস করলে অবশ্যই রোজা ফাসেদ (নষ্ট) হয়ে যাবে।
৩. কোনো রোজাদারকে ভুলবশতঃ খেতে দেখলে তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া ওয়াজিব (অবশ্য কর্তব্য)। কিন্তু যদি দেখে সে ব্যক্তি দুর্বল এবং রোজা রাখতে অসমর্থ তবে স্মরণ করাবে না। তাকে খেতে দিবে।
৪. কুলি করার সময় এবং নাকে পানি দেয়ার সময় যদি পেটে পানি যায় তবে রোজার কথা স্মরণ থাকলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং পরে কাজা করতে হবে। আর যদি রোজার কথা স্মরণ না থাকে তবে রোজা নষ্ট হবে না।
৫. গোসলের সময় যদি পানি ফুসফুসে চলে যায়। তবে রোজা ফাসেদ হয়ে যাবে।
৬. যদি কোনো রোজাদার খাদ্যবস্তু নয়- এমন কিছু গিলে ফেলে যেমন পাথর বা মাটি তবে রোজা ফাসেদ হয়ে যাবে। ঐ রোজার কাজা করতে হবে কিন্তু কাফ্ফারা প্রয়োজন হবে না। আরবি ‘কাফফারা’ শব্দটির অর্থ ক্ষতিপূরণ। কাফফারা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা একদম নিচে দেওয়া হয়েছে।
৭. যদি কোনো কিছু চিবিয়ে তার রস গিলে ফেলে তবে রোজা ফাসেদ হয়ে যাবে এবং এর জন্য কাফ্ফারা ওয়াজিব (অবশ্য পালনীয়) হবে।
৮. যদি তরমুজের ছোলা বা এ জাতীয় কোনোকিছু যা মানুষে খেতে পারে- এ সমস্ত খেলেও রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। কাফ্ফারাও আদায় করতে হবে।
৯. যদি চাল, মশুরী, মাশকালাই খেয়ে ফেলে তবে কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না। তবে কাজা ওয়াজিব হবে।
১০. দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা সামান্য খাদ্যকণা গিলে ফেললে রোজা ফাসেদ হবে না বটে তবে পরিমাণে বেশী হলে রোজা ফাসেদ হবে। বুটের দানার সমান বা এর চেয়ে বেশী হলে তাকে বেশী ধরা হয় আর বুটের দানার চেয়ে কমকে সামান্য ধরা হয়।
১১. মুখ থেকে বের করে নিয়ে পুনরায় গিলে ফেললে সামান্য খাদ্যবস্তুর ক্ষেত্রেও রোজা ফাসেদ হবে।
১২. নিজের থুথুও হাতে নিয়ে গিলে ফেললে রোজা ফাসেদ হবে।
১৩. রক্ত পান করলে রোজা ভেঙে যাবে। কাজা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা হবে না। রক্ত যদি দাঁত থেকে বের হয়ে থুথুর সঙ্গে মিশে হুলকুমে যায় তবে রক্তের পরিমাণ থুথুর চেয়ে বেশী হলে রোজা ভেঙে যাবে। আর থুথুর পরিমাণ রক্তের চেয়ে বেশী হলে রোজা ভাঙবে না।
১৪. যদি বর্ষার পানি অথবা বরফের পানি হুলকুমে প্রবেশ করে তবে রোজা ভেঙে যাবে।
১৫. লোবান বা আগরবাতি জ্বালিয়ে তার ধোঁয়া নাকে টেনে নিলে রোজা ভেঙে যাবে। বিড়ি, সিগারেট বা হুক্কার ধোঁয়া পান করলেও রোজা ভেঙে যাবে।
১৬. কেউ যদি সেহেরী খাওয়ার পর পান চিবাতে চিবাতে ঘুমিয়ে পড়ে এবং পান মুখে থাকা অবস্থায় ভোর হয়ে যায় তবে তার রোজা শুদ্ধ হবে না। এই রোজা সে ভাঙতেও পারবে না। আবার এর পরিবর্তে একটি রোজাও কাজা করতে হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না।
১৭. কুল্লি করার সময় যদি রোজার কথা স্মরণে থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ করে হুলকুমের মধ্যে পানি প্রবেশ করে অথবা পুকুরে বা অন্য কোথাও ডুব দিয়ে গোসল করার সময় নাক বা মুখ দিয়ে হুলকুমে পানি চলে যায় তবে রোজা ভেঙে যাবে। এ অবস্থায় পানাহারও করতে পারবে না। এই রোজা কাজা করা ওয়াজিব। কাফ্ফারা ওয়াজিব নয়।
১৮. আপনাআপনি বমি হয়ে গেলে রোজা নষ্ট হয় না। বমি কম হোক অথবা বেশী হোক। কিন্তু ইচ্ছা করে মুখ ভর্তি করে বমি করলে রোজা নষ্ট হয়ে যায়। কম বমি করলে রোজা নষ্ট হয় না।
১৯. আপনাআপনি সামান্য বমি হওয়ার পর আপনাআপনি যদি হুলকুমের ভিতরে চলে যায় তবে রোজা নষ্ট হয় না। কিন্তু যদি ইচ্ছা করে সামান্য বমিও গিলে ফেলে, তবে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। আবার বেশী বমির ক্ষেত্রে অনিচ্ছাকৃতভাবে হুলকুমে চলে গেলেও রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। এ অবস্থায় পানাহার করবে না। পরে কাজা আদায় করে নিবে।
২০. যদি কেউ হঠাৎ একটি পাথরের টুকরা অথবা লৌহখণ্ড অথবা পয়সা গিলে ফেলে (খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয় না এমন যে কোনো বস্তু) তবে রোজা ভেঙে যাবে। এই রোজার কাজা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না।
২১. রোজাদার যদি স্ত্রী সহবাস করে অথবা তার পুরুষাঙ্গ স্ত্রীঅঙ্গে প্রবেশ করায় তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। এ অবস্থায় কাজা ও কাফ্ফারা দুটিই ওয়াজিব (অবশ্য পালনীয়) হবে।
২২. রমজান মাসের রোজা রেখে ভাঙলে কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়। রমজান ছাড়া অন্য সময়ের যেকোনো প্রকার রোজা রেখে ভাঙলে কাফ্ফারা ওয়াজিব হয় না। শুধু কাজা ওয়াজিব হয়। রমজানের কাজার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। (কাজার অর্থ এক রোজার বদলে একটি রোজা আদায় করা। কাফ্ফারা বলতে একটি রোজার বদলে ৬০টি রোজা আদায় করা বুঝায়। একটু পরেই কাফ্ফারার বিবরণ আসবে)।
২৩. নাকে নস্য টানলে, কানে তেল দিলে অথবা পশ্চাত দ্বারে ঢুস্ লাগালে রোজা ভেঙে যাবে। এমতাবস্থায় এ রোজার কাজা আদায় করতে হবে। কাফ্ফারা করতে হবে না।
২৪. রোজা অবস্থায় প্রস্রাবের রাস্তায় ঔষধ অথবা কোনোপ্রকার তেল রাখা বা মালিশ করা নিষেধ। এরকম করলে রোজা ভেঙে যাবে। কাজা করতে হবে। কাফ্ফারা লাগবে না।
২৫. ধাত্রী যদি প্রসূতির স্ত্রীঅঙ্গে কোনো কারণবশতঃ হাতের কোনো আঙুল প্রবেশ করিয়ে দেয় অথবা নিজের স্ত্রী অংগে আঙুল ঢুকায় তবে রোজা ভাঙবে না। কিন্তু পুনরায় ঢুকালেই রোজা ভেঙে যাবে। আর যদি আঙুল পানি দ্বারা ভেজা থাকে তবে একবার ঢুকালেই রোজা ভেঙে যাবে।
২৬. রোজা রেখে দিনের বেলায় কয়লা, মাজন বা বালুর দ্বারা দাঁত মাজা মকরূহ। যদি এর কিছু অংশ হুলকুমে চলে যায় তবে রোজা ভেঙে যাবে।
২৭. ভুলে পানাহার করলে রোজা যায় না। কিন্তু এরকম হঠাৎ হয়ে গেলে রোজা ভেঙে গিয়েছে মনে করে যদি কেউ কিছু খেয়ে নেয় তবে রোজা ভেঙে যাবে। এ রোজার কাজা করতে হবে। কাফ্ফারা প্রয়োজন হবে না।
২৮. আপনাআপনি বমি হলেও রোজা নষ্ট হয় না। কিন্তু রোজা নষ্ট হয়েছে মনে করে যদি কেউ পরে পানাহার করে তবে তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। এ রোজার কাজা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না।
২৯. কেউ যদি সুরমা বা তেল লাগানোর পর অজ্ঞতাবশতঃ মনে করে যে তার রোজা নষ্ট হয়েছে এবং এর পরে যদি পানাহার করে তবে তার কাজা ও কাফ্ফারা উভয়টিই ওয়াজিব হবে।
৩০. রমজান মাসে কোনো কারণবশতঃ যদি কারো রোজা ভেঙে যায় তবুও দিনের বেলায় তার জন্য খাওয়া দাওয়া করা শোভনীয় নয়। রোজাদারদের মতো পানাহার থেকে দূরে থাকা তার জন্য ওয়াজিব।
৩১. রোজার নিয়ত করে রোজা ভাঙলে তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়। রমজানে রোজার নিয়ত না করে কেউ খাওয়া দাওয়া করলে তার উপর কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না।
৩২. ঘুমন্ত রোজাদার স্ত্রীর সঙ্গে যদি তার রোজাদার স্বামী সহবাস করে ফেলে। তবে উভয়েরই রোজা ভেঙে যাবে। স্ত্রীর শুধু কাজা ওয়াজিব হবে। আর স্বামীর কাজা ও কাফ্ফারা দুইটিই ওয়াজিব হবে।
৩৩. স্ত্রীকে চুম্বন করলে যদি স্বামীর বীর্যস্খলন হয়ে যায় তবে স্বামীর রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। এরকম হলে কাজা ওয়াজিব হবে। কাফ্ফারা ওয়াজিব হবে না।
৩৪. যদি স্ত্রী যৌন উত্তেজনা সহ স্বামীকে চুম্বন করে তবে তার রোজা ভেঙে যাবে। অথবা চুম্বনের সময় বা পরেও যদি যৌন আস্বাদন অনুভব করে, তবে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে।
৩৫. কোনো স্ত্রীলোক কোনো কারণ বশতঃ তার লজ্জাস্থানে ফোঁটা ফোঁটা তেল বা ঔষধ ঢেলে দেয় তবে তার রোজা ভেঙে যাবে।
৩৬. পেটের বা মাথার জখমে ভেজা কোনো ঔষধ লাগালে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে। ঔষধ শুকনা হলে মাথায় বা পেটে যেহেতু ঔষধ প্রবেশ করবে না তাই রোজাও ভাঙবে না।
৩৭. যদি রোজাদার এস্তেনজার সময় এতটুকু সময় দেরী করে যে তার প্রস্রাব বা পায়খানার রাস্তায় পানি প্রবেশ করে তবে তার রোজা ভেঙে যাবে।
কাফ্ফারা
আরবি ‘কাফফারা’ শব্দটির অর্থ ক্ষতিপূরণ। মাহে রমজানের ফরজ রোজা রাখার পরে কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভেঙে ফেললে কাজা এবং কাফফারা উভয়টাই আদায় করা ওয়াজিব। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একবার এক লোক রমজান মাসের রোজা ভেঙে ফেলল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে দাস মুক্ত করার মাধ্যমে অথবা লাগাতার ষাট দিন রোজা রাখার মাধ্যমে অথবা ষাটজন মিসকিনকে খাবার খাওয়ানোর মাধ্যমে কাফফারা আদায় করার নির্দেশ দিলেন।(মুআত্তা ইমাম মালেক, হাদীস: ১০৪৩) ইসলামী শরিয়তে কাফফারা তিন পদ্ধতিতে আদায়ের বিধান দেওয়া হয়েছে। (১) দাস মুক্ত করা (২)লাগাতার ষাট দিন রোজা রাখা (৩) ও মিসকিনকে খাদ্য দানের মাধ্যমে।
বর্তমানে যেহেতু পৃথিবীতে দাসপ্রথা আর অবশিষ্ট নাই সুতরাং দাস মুক্ত করে কাফফারা আদায় করার সুযোগও আর নাই। যাদের রোজা রাখার সক্ষমতা আছে তাদের রোজার মাধ্যমেই রোজার কাফফারা আদায় করতে হবে। আর যাদের রোজা রাখার মতো শারীরিক সক্ষমতা নাই এবং ভবিষ্যতেও তেমন সক্ষমতা ফিরে পাওয়ার আশা নাই শুধু তাদের জন্য মিসকিনকে খাদ্য দানের মাধ্যমে কাফফারা আদায়ের অনুমতি আছে।
রমজান মাসের রোজা রেখে ভেঙে ফেললে তার উপর কাফ্ফারা (ক্ষতিপূরণ ) আদয় করা ওয়াজিব হয়। কাফ্ফারার বিধি এই যে একটি রোজা ভাঙলে তার পরিবর্তে একাধারে ৬০টি রোজা রাখতে হবে। মাঝে মাঝে বাদ দিয়ে রোজা রাখলে কাফ্ফারা আদায় হবে না। ধারাবাহিকভাবে ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে।
এ সম্পর্কে আরো জানা প্রয়োজন যে-
১. কয়েকদিন রোজা রাখার পর যদি কোনো কারণে ছেদ পড়ে তবে পুনরায় ধারাবাহিকভাবে ৬০ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত রোজা রাখতে হবে। আগেরগুলি হিসাবে ধরা যাবে না।
২. কাফ্ফারার রোজা রাখতে গিয়ে যদি ঈদ বা কোরবানী এসে পড়ার কারণে ছেদ পড়ে তবে ঐ একই নিয়মে ঈদ বা কোরবানীর পর ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখতে হবে। আগেরগুলির হিসাব ধরা হবে না।
৩. একাধারে রোজা রাখতে গিয়ে যদি কোনো মহিলার হায়েজ আসে তবে মাফ। হায়েজ থেকে পাক হবার পর পরই পুনরায় রোজা রাখতে হবে এরকম অবস্থায় তার হায়েজ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী রোজাসমূহ ধারাবাহিক বলে গণ্য হবে।
৪. নেফাসের কারণে যদি ছেদ পড়ে তবে নেফাস পূর্ববর্তী রোজাসমূহ গণনায় আনা যাবে না। নেফাস পরবর্তী সময় থেকে একাধারে ৬০ রোজা করতে হবে।
৫. রোগের কারণে রোজায় ছেদ পড়লেও একই নিয়ম। রোগপূর্ববর্তী রোজা হিসাবে আসবে না। সুস্থতার পর লাগাতার ৬০ রোজা করতে হবে ।
৬. কাফ্ফারা আদায়ের মাঝখানে যদি রমজান মাস এসে পড়ে তবে কাফ্ফারা আদায় হবে না। রমজানের পর পুনরায় লাগাতার ৬০ রোজা করতে হবে।
অপারগতায় করণীয়
কাফ্ফারার রোজা আদায়ের শক্তি না থাকলে তাকে সহায়সম্বলহীন মিসকিনকে আহার করাতে হবে। অথবা খাদ্যবস্তু কিংবা তার মূল্য দান করতে হবে।কতটুকু খাওয়াতে হবে বা দান করতে হবে নিচে তা নিচে দেওয়া হলো
১. কাফ্ফারার রোজা রাখতে অসমর্থ হলে ১টি রোজার কাফ্ফারা হিসাবে ৬০ জন মিসকিনকে পেট পুরে দুই বেলা খাওয়াতে হবে।
২. অল্পবয়স্ক যারা পূর্ণবয়স্কদের সমান আহার করতে পারে না তাহাদেরকে হিসাবে ধরা হবে না। পূর্ণবয়স্ক ৬০ জন মিসকিন হতে হবে।
৩. পাকানো খাদ্য না খাইয়ে যদি ৬০ জন মিসকিনকে গম বা গমের আটা দেয় তবে তাও বৈধ হবে। কিন্তু গম বা গমের আটা দিতে হবে একজনের ফেতরার মূল্যমানের সমান।
৪. যদি নিজের কাফ্ফারা আদায়ের জন্য কেউ অন্য কোনো ব্যক্তিকে আদেশ করে বা অনুমতি দেয় তবে সেই ব্যক্তি কাফ্ফারা আদায় করলেও হয়ে যাবে। কিন্তু বিনা অনুমতিতে কেউ কারো কাফ্ফারা আদায় করলে তা আদায় হবে না।
৫. যদি ১ জন মিসকিনকে ৬০ দিন দুই বেলা পেট ভরে খাইয়ে দেয় অথবা যদি একজনকেই ৬০ দিন ৬০ বার ফেতরার সমমূল্যের গম দান করে অথবা ফেতরার মূল্য দান করে তবে কাফ্ফারা আদায় হয়ে যাবে।
৬. যদি ৬০ দিন খাওয়ানোর সময় অথবা গম বা উহার মূল্য (ফেতরা পরিমাণ) দানের সময় মাঝখানে দুই একদিন বাদ পড়ে তবে কোনো ক্ষতি নেই। সর্বমোট ৬০ দিন হলেই চলবে।
৭. ৬০ দিনের আহার্য বস্তু বা উহার মূল্য একই দিনে একজন মিসকিনকে দেয়া যাবে না। দিলে ১ দিনের কাফ্ফারা আদায় হবে। বাকী ৫৯ দিনের কাফ্ফারা পুনরায় আদায় করতে হবে
৮. ১ জন মিসকিনকে একজনের ফেতরার কম মূল্যমানের কিছু দান করলে চলবেনা।
৯. যদি কোনো রমজান মাসে একাদিক রোজা ভেঙে থাকে তবুও একটি কাফ্ফারা (৬০ দিন) আদায় করতে হবে। বাকী রোজাগুলির জন্য ১টির বদলে ১টি এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে।
১০. যদি দুই রমজানে ২টি রোজা ভাঙা পড়ে তবে কাফ্ফারাও ২টি (৬০ দিন+৬০ দিন) দিতে হবে।
পোস্টে কোথাও ভুল ক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন সকল প্রকার টিপস এবং ট্রিক পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ট্রিকবিডিফ্রি
Trickbdfree.com এর সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।