ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল!

ভূমিকম্পের কারণ ও ফলাফল!

আসসালামু আলাইকুম ট্রিকবিডিফ্রি trickbd free এর পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো ভুমিকম্পের কারন ও ফলাফল।এই ভুমিকম্পের কারন ও ফলাফল জানার আগে এখানে ক্লিক করে জেনে নিন ভুমিকম্প কি?

ভুমিকম্পের কারন ও ফলাফল। ভুমিকম্প কেন হয় trickbdfree.comEarthquake causes and results


Earthquake causes and results!

অনেক কারণে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে।তা নিচে তুলে ধরা হলো।

১. ভূপৃষ্ঠজনিত

আমাদের ভূ -পৃষ্ঠ অনেকগুলো প্লেট-এর সমন্বয়ে গঠিত। এই প্লেটগুলো একটি আরেকটির থেকে আলাদা থাকে ফল্ট বা ফাটল দ্বারা। এই প্লেটগুলোর নিচেই থাকে ভূ-অভ্যন্তরের সকল গলিত পদার্থ। কোনও প্রাকৃতিক কারণে এই গলিত পদার্থগুলোর স্থানচ্যুতি ঘটলে প্লেটগুলোরও কিছুটা স্থানচ্যুতি ঘটে। এ কারণে একটি প্লেটের কোনও অংশ অপর প্লেটের তলায় ঢুকে যায়, যার ফলে ভূমিতে কম্পন সৃষ্টি হয়। আর এই কম্পনই ভূমিকম্প রূপে আমাদের নিকট আবির্ভূত হয়।

২. আগ্নেয়গিরিজনিত

কখনো কখনো আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ও গলিত লাভা উৎক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হতে পারে।

৩. শিলাচ্যুতিজনিত

কখনো কখনো পাহাড় কিংবা উচু স্থান থেকে বৃহৎ পরিসরে শিলাচ্যুতিজনিত কারণে ভূমিকম্প হতে পারে।

৪. ভূপাত

কোনো কারণে পাহাড়-পর্বত হতে বৃহৎ শিলাখণ্ড ভূত্বকের ওপর ধসে পড়ে ভূমিকম্প হয়। সাধারণত ভাঁজ পর্বতের নিকট অধিক ভূমিকম্প হয়।

৫. তাপ বিকিরণ

ভূত্বক তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হয়ে পড়লে ফাটল ও ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।

৬. ভূগর্ভস্থ বাষ্প

নানা কারণে ভূগর্ভে বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এই বাষ্প ক্রমাগত বৃদ্ধি পেলে তা ভূত্বকের নিম্নভাগে ধাক্কা দেয়; ফলে প্রচণ্ড ভূকম্পন অনুভূত হয় এবং ভূমিকম্প হয়।

৭. হিমবাহের প্রভাবে

কখনো কখনো প্রকাণ্ড হিমবাহ পর্বতগাত্র হতে হঠাৎ নিচে পতিত হয়। এতে ভূত্বক কেঁপে ওঠে এবং ভূমিকম্পনের সৃষ্টি হয়।

ভূমিকম্প কেন হয়,তার প্রধান কারণ ও অপ্রধান কারন

ভুমিকম্পের প্রধান কারন

 • পৃথিবীর উপরিভাগ কতকগুলো ফলক/প্লেট দ্বারা গঠিত। এই প্লেটসমূহের সঞ্চালন প্রধানত ভূমিকম্প ঘটিয়ে থাকে।

• অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্লেটসমূহের উপর ভূকম্পন সৃষ্টি হয়। 

ভুমিকম্পের অপ্রধান কারণ 

১। শিলাচ্যুতি বা শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টি। কোনো কারণে ভূপৃষ্ঠের অভ্যন্তরে বড় ধরনের শিলাচ্যুতি ঘটলে বা শিলাতে ভাঁজের সৃষ্টি হলে ভূমিকম্প হয়। ১৯৩৫ সালে বিহারে এবং ১৯৫০ সালে আসামে এ কারণেই ভূমিকম্প হয়। 

২। তাপ বিকিরণ ভূত্বক তাপ বিকিরণ করে সংকুচিত হলে ফাটল ও ভাঁজের সৃষ্টি হয়ে ভূমিকম্প হয়।

৩। ভূগর্ভস্থ বাষ্প : পৃথিবীর অভ্যন্তরে অত্যধিক তাপের কারণে বাষ্পের সৃষ্টি হয়। এই বাষ্প ভূত্বকের নিম্নভাগে ধাক্কা দেওয়ার ফলে প্রচন্ড ভূকম্পন অনুভূত হয়। 

৪। ভূগর্ভস্থ চাপের বৃদ্ধি বা হ্রাস : অনেক সময় ভূগর্ভে হঠাৎ চাপের হ্রাস বা বৃদ্ধি হলে তার প্রভাবে ভূমিকম্প হয়। 

৫। হিমবাহের প্রভাব : হঠাৎ করে হিমবাহ পর্বতগাত্র থেকে নিচে পতিত হলে ভূপৃষ্ঠ কেঁপে ওঠে এবং ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের ফলাফল (Effects of earthquakes ) : ভূমিকম্পের ফলে ভূপৃষ্ঠের অনেক ধরনের পরিবর্তন। ঘটে এবং বহু ধ্বংসলীলা সাধিত হয়। ঘরবাড়ি, ধনসম্পদ ও যাতায়াত ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়। এতে জীবনেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে।

ভূমিকম্পের ফলাফল বা ভুমিকম্প হলে কি হয়?

 (১) ভূমিকম্পের ফলে ভূত্বকের মধ্যে অসংখ্য ভাঁজ, ফাটল বা ধসের সৃষ্টি হয়। নদীর গতিপথ পাল্টে যায়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ১৭৮৭ সালে আসামে যে ব্যাপক ভূমিকম্প হয় তাতে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের তলদেশ কিছুটা উঁচু হয়ে যায়। ফলে নদটি তার গতিপথ পাল্টে বর্তমানে যমুনা নদী নিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করে। 

(২) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় সমুদ্রতল উপরে উত্থিত হয়, পাহাড়-পর্বত বা দ্বীপের সৃষ্টি করে। আবার কোথাও স্থলভাগের অনেক স্থান সমুদ্রতলে ডুবে যায়। ১৮৯১ সালে ভারতের কাছ উপসাগরের উপকূলে প্রায় ৫,০০০ বর্গকিলোমিটার স্থান সমুদ্রগর্ভে নিমজ্জিত হয়। 

(৩) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় নদীর গতি পরিবর্তিত হয় বা কখনো কখনো বন্ধ হয়ে যায়। কখনো কখনো নদী শুকিয়ে যায়। আবার সময় সময় উচ্চভূমি অবনমিত হয়ে জলাশয়ের সৃষ্টি হয়। ১৯৫০ সালে আসামের ভূমিকম্পে দিবং নদীর গতি পরিবর্তিত হয়। 

(৪) ভূমিকম্পের ফলে অনেক সময় পর্বতগাত্র থেকে হিমানীসম্প্রপাত হয় এবং পর্বতের উপর শিলাপাত হয়। (৫) ভূমিকম্পের ফলে হঠাৎ করে সমুদ্র উপকূল সংলগ্ন এলাকা জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়।


তথ্যসুত্রঃWikipedia,NCTB Book Class 9-10


কোনো প্রকার ভুল ক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন। সকল প্রকার টিপস এবং ট্রিক পেতে আমাদের ওয়েবসাইট Trickbd free এর সাথেই থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url