আগামী ১৫ থেকে ১৭ ই ডিসেম্বর উল্কা বৃষ্টি হবে
নতুন এক ঘটনার স্বাক্ষী হতে চলছে পৃথিবী!
৪ই ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে জেনমিট উল্কার ঝর্নাপাত এর ফলে,
১৫ই ডিসেম্বর থেকে ১৭ই ডিসেম্বর উল্কা বৃষ্টি হওয়ার কথা রয়েছে।অর্থাৎ এই 15 থেকে 17 ডিসেম্বর আকাশ থেকে ১০০ থেকে ১২০ টি উল্কা খসে পড়বে পৃথিবীতে। তবে মেঘের বাধা না থাকলে ১২০ থেকে ১৬০ টি উল্কা পৃথিবীতে খসে পড়তে পারে।যার গতিবেগ ঘন্টায় ৭৮ হাজার মাইল বা প্রতি সেকেন্ডে ৩৫ কিলোমিটার।
আজ ১৫ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া থেকে উল্কাপাত দেখা গেছে এবং আগামি দুইদিন দেখা জাবে।অনেকে আবার এটাকে খারাপ জীনের আলো ভাবতে পারেন।আসলে এটি উল্কা।
উল্কা বৃষ্টি কি? তারাখসা কী ? উল্কা কী?What is a meteor shower?
মহাকাশে কোন যখন কোন ধমকেতু বিস্ফোরিত হয় তখন উল্কা বৃষ্টি হয়।অর্থাৎ ধুমকেতুর ধ্বংসাবশেষ মহাধর্শন শক্তির প্রভাবে পৃথিবীর দিকে আসতপ থাকে তখন উল্কা বৃষ্টি হয় বা উল্কাপাত হয়।এটা উল্কা ঝড় নামেও পরিচিত,অনেকের এটাকে তারাখসা বলে।যখন উল্কা বৃষ্টি হয় তখন ঘন্টায় এক হাজার উল্কা বৃষ্টি হতে পারে।
১৫ থেকে ১৭ই ডিসেম্বর উল্কা বৃষ্টি প্রসঙ্গে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেছেন,জেনিমিট এসেছে 30200 পাইথন নামক পাথুড়ে গ্রহাণু থেকে, পাইথন হলো একটি গ্রহাণুর বিচ্ছিন্ন অংশ যা সূর্যের চারিদিকে ঘোরে এবং ধুলা হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।পৃথিবীর অভিকর্ষ বলে পৃথিবীর কাছে চলে আসলে তখন বায়ুমণ্ডলের সংঘর্ষে আগুন জ্বলে ওঠে।
What is Kuiper belt? কুইপার বেল্ট কি?
কুুুইপার বেল্ট হল সৌরজগতের বাইরে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে বিস্তীর্ণ এলাকা যেখানে ধুমকেতু থাকে।
কিভাবে উল্কা বৃষ্টির উৎপত্তি?
সৌরমন্ডলের বাইরে প্রায় সাড়ে ৩০০ কিলোমিটার দূরে বিস্তীর্ণ ( Kuiper belt ) কুইপার বেল্ট।
কুইপার বেল্টে রয়েছে পাথর এবং বরফে ভরা।এখানে এই কুইপার বেল্টের ভিতরে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে ধুমকেতুরা।ধুমকেতু বছরে একবার বের হয়। সূর্যের তাপে এদের কিছু অংশ ঝলসে যায় বা খসে যায়।এবং অভিকর্ষ বলের ফলে এরা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসে। এই উল্কা গুলো পৃথিবীর দিকে এত দ্রুতগতিতে আসে পৃথিবীপৃষ্ঠে পতিত হওয়ার আগেই আগুন ধরে ছাই হয়ে মিলিয়ে যাই । এবং কিছু অংশ পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ে।
শুধু পৃথিবীতেই নয় আরো মঙ্গল গ্রহে এবং অন্যান্য গ্রহতেও উল্কা বৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে এমনকি চাঁদেও উল্কা বৃষ্টি হতে পারে।
সুত্রঃ- দেশটিভি ( Deshtv )
যেহেতু উল্কপাত এর কারন ধুমকেতু, তাই আমাদের এটাও জানতে হবে ধুমকেতু কী?
ধুমকেতু কী? What is comet?
ধুমকেতু হল ধুলো, বরফ ও গ্যাসের তৈরি এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু। ধূমকেতু একটি ক্ষুদ্র বরফাবৃত সৌরজাগতিক বস্তু যা সূর্যের খুব নিকট দিয়ে পরিভ্রমণ করার সময় দর্শনীয় কমা (একটি পাতলা, ক্ষণস্থায়ী বায়ুমন্ডল) এবং কখনও লেজও প্রদর্শন করে । ধূমকেতুর নিউক্লিয়াসের ওপর সূর্যের বিকিরণ ও সৌরবায়ুর প্রভাবের কারণে এমনটি ঘটে। ধূমকেতুর নিউক্লিয়াস বরফ, ধুলা ও ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথুরে কণিকার একটি দুর্বল সংকলনে গঠিত। প্রস্থে কয়েকশ মিটার থেকে দশ কি.মি. এবং লেজ দৈর্ঘ্যে কয়েকশ কোটি কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে । (উইকিপেডিয়া অনুযায়ী)
হ্যালির ধূমকেতু কী? What is Halley's Comet?
হ্যালির ধূমকেতু ইংরেজ বিজ্ঞানী এডমন্ড হ্যালি আবিষ্কার করেন।বিজ্ঞানী হ্যালী প্রথম দেখান যে ১৫৩১, ১৬০৭, ১৬৮২ সালের ধূমকেতু ১৭৫৯ সালের শেষে আবার দেখা যাবে। তার এই সফল হিসাবের জন্য এই ধূমকেতুর নাম হ্যালীর ধূমকেতু।
কিছু ধুমকেতু নির্দিষ্ট সময় পরপর একই স্থানে ফিরে আসে। যেমন হ্যালীর ধুমকেতু। হ্যালির ধূমকেতু (ইংরেজি: Halley's Comet) বা ধূমকেতু হ্যালি (ইংরেজি: Comet Halley), প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ১পি/হ্যালি (ইংরেজি: 1P/Halley) নামাঙ্কিত, হল পৃথিবী থেকে প্রতি ৭৫-৭৬ বছরে দৃশ্যমান একটি স্বল্প-পর্যায়ের ধূমকেতু হ্যালির ধূমকেতুই হল একমাত্র জ্ঞাত স্বল্প-পর্যায়ের ধূমকেতু যা পৃথিবী থেকে খালি চোখে দেখা যায় এবং সেই কারণে এটিই খালি চোখে দৃশ্যমান একমাত্র ধূমকেতু যা একজন মানুষের জীবদ্দশায় দুই বার দৃষ্টিগোচর হতে পারে। সৌরজগতের অভ্যন্তরীণ অংশে হ্যালির ধূমকেতু শেষ বার উপস্থিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে এবং এরপরে আবার আসবে ২০৬১ সালের মধ্যভাগে। (তথ্য উইকিপেডিয়া)
পোস্টে কোথাও ভুল ক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ হাফেজ।