হ্যাকিং কি ? হ্যাকিং কত প্রকার ও কি কি?

What is hacking? How many types of hacking and what is it? হ্যাকিং কি ? হ্যাকিং কত প্রকার ও কি কি?

হ্যালো বন্ধুগন আজকের আলোচনা করবো হ্যাকিং কি এবং কত প্রকার।

হ্যাকিং হলো একজন ব্যক্তির কম্পিউটার বা একটি প্রতিষ্ঠান এর সার্ভার বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এ বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করাই হলো হ্যাকিং। কম্পিউটার প্রোগ্রামের ত্রুটি বের করে কম্পিউটারকে পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে (access) করে নেওয়া। অথবা কোনো গুরত্বপূর্ণ ফাইল বা ডেটা চুরি করা এটাই হলো হ্যাকিং।

সহজ করে বলতে গেলে কোন ডিভাইস বা নেটওয়ার্কে চুপি চুপি চুরি করে অনুপ্রবেশ করাকে হ্যাকিং বলে। 


হ্যাকিং কত প্রকার?

হ্যাকিং প্রধানত দুই প্রকার যথা,

  • ইথিক্যাল হ্যাকিং
  • আনইথিক্যাল হ্যাকিং।

হ্যাকিং এর আরও কিছু সাবক্যাটাগরি আছে যেমন 

  • সার্ভার বা ওয়েবসাইট হ্যাকিং
  • কম্পিউটার হ্যাকিং
  • নেটওয়ার্ক হ্যাকিং
  • পাসওয়ার্ড হ্যাকিং 
  • ওয়াইফাই হ্যাকিং
  • ওয়াইফাই এডমিন প্যানেল হ্যাকিং
  • ওয়েবসাইট হ্যাকিং
  • ওয়েবসাইট এডমিন প্যানেল হ্যাকিং
  • ওয়েবসাইট সিপ্যানেল হ্যাকিং
  • মোবাইল হ্যাকিং
  • ফেসবুক হ্যাকিং
  • জিমেইল হ্যাকিং
  • ইউটিউব চ্যানেল হ্যাকিং
  • হোয়াইটএপ হ্যাকিং
  • ইমো হ্যাকিং
  • স্কাইপি হ্যাকিং
  • টুইটার হ্যাকিং
  • ইনস্টাগ্রাম হ্যাকিং
  • টেলিগ্রাম গ্রুপ এবং চ্যানেল হ্যাকিং
  • টিভি চ্যানেল হ্যাকিং
  • স্যাটেলাইট হ্যাকিং
  • ব্যাংক একাউন্ট হ্যাকিং 
  • বিকাশ নগত রকেট হ্যাকিং
  • ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড হ্যাকিং ইত্যাদি

তবে এসব কিছুই হ্যাকিং এর প্রধান দুই ভাগের মধ্যে পরে। চলুন শুরুতে হ্যাকিং এর প্রধান প্রকারভেদ সম্পর্কে জেনে নেই।

এথিক্যাল হ্যাকিং

প্রথমেই আলোচনা করি ইথিক্যাল হ্যাকিং নিয়ে। ইথিক্যাল শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ নৈতিক। অর্থাৎ ইথিক্যাল দ্বারা ভালো কাজ বোঝায়। সাধারণত হোয়াইট হ্যাট হ্যাকারের কাজকে ইথিক্যাল হ্যাকিং বলা হয়। এরা হ্যাকিং করে ভালো উদ্দেশ্যে যা সিস্টেমের ত্রুটি খুঁজে বের করতে সহায়তা করে। এসব ত্রুটি সমাধান করে সিস্টেমকে খারাপ হ্যাকার থেকে দূরে রাখা যায়। ইথিক্যাল হ্যাকিং টার্ম তৈরি করা হয়েছে হ্যাকিং কে ভালো কাজে লাগানোর জন্য।

ইথিক্যাল হ্যাকিং এবং আনইথিক্যাল হ্যাকিং বলতে আমার আবার নিচের টা ও বুঝে থাকি। 

ইথিক্যাল হ্যাকিং বলতে আমরা উচ্চ লেভেলের হ্যাকিং ও বলতে পারি আর আনইথিক্যাল বলতে আমরা দুর্বল হ্যাকার বলতে পারি।  যেমন এমবিবিএস ডাক্তার এবং হাতুরে ডাক্তার এর সাথে তুলনা করে পারি। 

সাধারণত ইথিক্যাল হ্যাকিং যারা করে তারা টাকার বিনিময়ে অথবা কোম্পানিতে সরাসরি চাকরী করার মাধ্যমে হ্যাকিং করে থাকে। তাদের দায়িত্ব থাকে সিস্টেম এবং নেটওয়ার্ক হ্যাক করে টেস্ট করার জন্য। তারা যদি সঠিকভাবে হ্যাক করতে পারে তাহলে সে সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক পটেনশিয়াল অ্যাটাকারের কাছে ভালনারেবল হয়ে থাকে। তখন সেই ইথিক্যাল হ্যাকারের দায়িত্ব থাকে সিস্টেম এবং নেটওয়ার্ক অ্যাডমিনকে দুর্বলতার তথ্য ইনফরম করা। এর সাথে তাকে বলে দেওয়া যে কি কি ইমপ্রুভমেন্ট করতে হবে যাতে পুনরায় হ্যাক না হয়।  

হ্যাকিং কত প্রকার ও কি কি?

আনইথিক্যাল হ্যাকিং

এবার আলোচনা করবো আনইথিক্যাল হ্যাকিং নিয়ে। হ্যাকিং দুনিয়ায় অনৈতিক এবং ক্ষতিকারক কাজ যারা করে তাদের আনইথিক্যাল হ্যাকার বলে। তাদের করা কাজকর্ম গুলোকে বলা হয় আনইথিক্যাল হ্যাকিং। ইথিক্যাল হাকিং এ যেমন সিস্টেম এবং নেটওয়ার্ককে সুরক্ষিত রাখতে হ্যাক করা হয় আনইথিক্যাল হ্যাকিং এ তার উল্টো টা হয়। অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে হ্যাকার ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে হ্যাক করে। সারা বিশ্বে আনইথিক্যাল হ্যাকিং কে ঘৃণা করা হয়। কারণ তারা তাদের মেধা খারাপ কাজে লাগায় এবং মানুষকে হয়রানির শিকার করে।

তবে অনেকেই মনে করেন যে হ্যাকিং মানে অবৈধভাবে বেআইনি কাজ তবে এটা পুরোপুরি সত্য নয়। Hacking মানেই যে illegal এটা ঠিক নয় হাকিং কে ভালো কাজে ব্যবহার করা যায় এবং খারাপ কাজে ব্যবহার করা যায়।


 হ্যাকার কাকে বলে?

হ্যাকার বলতে আমরা সহজ ভাবে বলতে পারি যে কোনো ব্যাক্তি যখন অন্য কোনো ব্যাক্তির নেটওয়ার্কের নিরাপত্তা ভেঙে সহজভাবে প্রবেশ করতে পারে তাদের কে হ্যাকার বলে।

হ্যাকার হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি নিরাপত্তা/অনিরাপত্তার সাথে জড়িত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বল দিক খুঁজে বের করায় বিশেষভাবে দক্ষ অন্য কম্পিউটার ব্যবস্থায় অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম বা এর সম্পর্কে গভীর জ্ঞানের অধিকারী।তিনি চাইলে হ্যাক করে ভালো কাজ করতে পারে আবার ক্ষতিও করতে পারে। এবার জেনে নেই হ্যাকিং কত প্রকার কি কি? 

হ্যাকার কত প্রকার ও কি কি?

হ্যাকারকে প্রধানত ৩ ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।

1. কালোটুপির হ্যাকার Black hat Hacker

2. সাদা টুপির হ্যাকার White hat Hacker

3. ধূসর টুপির হ্যাকার Grey hat Hacker

1. ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার Black hat Hacker

কালোটুপির হ্যাকারঃ- ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকাররা আপনাদের পারমিশন ছাড়া নিজের স্বার্থ লাভের জন্য বিভিন্ন রকমের অবৈধ (illegal activities) কাজ করে থাকে যেমন কম্পিউটার সিস্টেম হাক করা, পাসওয়ার্ড হ্যাক করা, ব্যাংকের সার্ভার হ্যাক করা, ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরি করা, ব্যাংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া ইত্যাদি। এই হ্যাকাররা আপনার সিস্টেম হ্যাক করে আপনার ডেটা নষ্ট বা ধ্বংস করে দিতে পারে। ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার কি আশা করি এই বিষয়টি বুঝে ফেলেছেন

2. হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার White hat Hacker

সাদা টুপির হ্যাকারঃ- এই ধরনের হ্যাকাররা কোন অবৈধ (illegal) কাজ করে না। আপনার পারমিশন নিয়ে বৈধভাবে হ্যাক করে থাকে আপনার সিকিউরিটি কে আরো মজবুত করার জন্য।  বড় বড় IT কোম্পানিতে high security প্রদান করে হোয়াইট হ্যাট হ্যাকাররা। আশাকরি হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার সম্পর্কে ধারনা পেয়েছেন বা বুঝতে পেরেছেন।

3. গ্রে হ্যাট হ্যাকার Grey hat Hacker

ধূসর টুপির হ্যাকারঃ- এধরনের হ্যাকাররা বৈধ (legal) ও অবৈধ (illegal) দুই ধরনের কাজ করতে পারে। আপনার সিস্টেমকে হাক করে ডাটা চুরি বা ধ্বংস করতে পারে , চাইলে এই ধরনের হ্যাকাররা হাই সিকিউরিটি provide  করতে পারে । এরা মূলত অনুমতি না নিয়ে সিস্টেমের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য হ্যাক করে থাকে কিন্তু এরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে  কোনরকম ক্ষতি করে না বা ডেটা চুরি করে না । এরা অবৈধ কারণ পারমিশন না নিয়েই গুলো করে। 


পরের পোস্টে দেখানো হবে কিভাবে হ্যাকিং থেকে বাঁচবেন।আজকের পোষ্ট এই পর্যন্ত পোস্টে কোথাও ভুল ক্রুটি হলে ক্ষমা করবেন। 

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url